Saturday, November 13

জেনারেশন নেক্সটের আইপিও বাতিল

Alo (November 12, 2010)

অনিয়মের অভিযোগে জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেড নামে আরও একটি কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজারে শেয়ার ছেড়ে মূলধন সংগ্রহের প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) গত বুধবার কোম্পানিটির প্রস্তাবটি বাতিল করেছে।
এর মাত্র দুই দিন আগে অনিয়ম ও তথ্য গোপনের অভিযোগে মডার্ন পলি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের অন্য একটি কোম্পানি আইপিওর অনুমোদন বাতিল করে এসইসি।
সূত্র জানায়, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেড ২৮ অক্টোবর বাজারে শেয়ার ছাড়ার অনুমোদন চেয়ে এসইসিতে আবেদন করে। কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের মোট তিন কোটি শেয়ার ছাড়তে চেয়েছিল। বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রস্তাবিত দাম নির্ধারণের জন্য প্রতিটি শেয়ারের নির্দেশক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫০ টাকা ৬৩ পয়সা। এ হিসাবে কোম্পানিটি সর্বোচ্চ ১৫২ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে পারত।
কিন্তু এসইসি আইপিওর প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে কোম্পানিটির প্রসপেক্টাসে উল্লিখিত সম্পদের হিসাবে বড় ধরনের গরমিল উদ্ঘাটন করে।
এসইসি জানায়, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনের প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করা হয়েছে, কোম্পানিটির চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী চলতি বছরের অক্টোবরে নিজ নামে থাকা ৩০৬ দশমিক ৫০ ডেসিমেল জমি কোম্পানির নামে লিখে দেন। তার মানে এর আগে জমিটি কোম্পানিটির অধিকারে ছিল না। কিন্তু ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির সম্পদ মূল্যায়নে এ জমির মূল্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এমনকি গত জুনে শেষ হওয়া অর্ধবার্ষিক নিরীক্ষিত হিসাবেও একই জমির আর্থিক মূল্যায়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) বলছে, অক্টোবরের আগে যে জমির মালিকানা কোম্পানির ছিল না, দুই বছর আগের সম্পদ মূল্যায়নে সেই জমির মূল্য অন্তর্ভুক্ত করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাছাড়া কোম্পানির হিসাব নিরীক্ষা করেছে যেই নিরীক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সেই প্রতিষ্ঠানকে দিয়েই আবার সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে।
এসইসি আরও বলেছেন, ২০০৬ সালে জারি করা এসইসির একটি প্রজ্ঞাপনে একই প্রতিষ্ঠান দিয়ে সম্পদ মূল্যায়ন ও হিসাব নিরীক্ষা করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও কোম্পানিটি আইন ভঙ্গ করেছে।
যোগাযোগ করা হলে এসইসির নির্বাহী পরিচালক এ টি এম তারিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সম্পদ মূল্য বাড়িয়ে দেখাতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। যে কোম্পানি শুরুতেই এ ধরনের অসততার আশ্রয় নিতে পারে, তাদের আইপিওর অনুমোদন দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে এসইসি কোম্পানিটির আইপিও প্রস্তাব বাতিল করেছে।
কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। আর এস এফ আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানি নিরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছে।
এসইসি সূত্র বলছে, এ অনিয়মের প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকায় এ দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments:

Post a Comment